নিজস্ব প্রতিনিধি:
চাকরিতে পুনর্বহাল বা পেনশন সুবিধা প্রদানসহ সরকারের কাছে তিন দফা দাবি জানিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর সদস্যরা। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে দাবিগুলো মানা না হলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘আমরণ অনশনের’ ঘোষণা দিয়েছেন এই তিন বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যরা।
বুধবার (৭ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে চাকরিচ্যুত সদস্যদের নিয়ে গঠিত সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সাবেক নৌবাহিনী সদস্য এস এম মাহতাব বলেন, বিগত সরকারের আমলে দলীয় পছন্দ-অপছন্দসহ নিজ নিজ সংস্থার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতাসীন কর্মকর্তাদের নানাবিধ রোষানলে পড়ে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত অনেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধাসহ পদোন্নতি দিয়ে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়। সামরিক বাহিনীর চাকরিচ্যুত বাকি সদস্যদের অনেকেই সত্য-মিথ্যার সংমিশ্রনে সাজানো অভিযোগের মাধ্যমে চাকরি হারিয়ে আজ পরিবার ও শিশু সন্তানদের নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। অথচ সরকার আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশসেবায় নিয়োজিত করেছিল। তাই পুনরায় আমরা নিজ নিজ বাহিনী প্রধানের নিকট অনুরোধ করছি যে, আমাদের সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে চাকরিচ্যুত পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মতো পুনরায় দেশসেবায় নিয়োজিত করার উদ্দেশে চাকরিতে পুনর্বহাল করা/পেনশন সুবিধা দেওয়া হোক। আমরা আমাদের নিজ নিজ বাহিনীর প্রতি পুনরায় আনুগত্য ও শ্রদ্ধা রেখেই আর্জি জানাচ্ছি যে, আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্য আমাদের দাবিদাওয়া মেনে না নিলে আমরা পরিবার নিয়ে আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে সামরিক বাহিনীতে বিদ্যামান ব্রিটিশ সরকারের সময়কার সামরিক আইনকে ‘কালো’ এবং ‘বৈষম্যমূলক’ অ্যাখা দিয়ে এ আইনকে সংশোধন করে সময়োপযোগী করার দাবি জানানো হয়।
এ সময় সাবেক সেনা সদস্য মো. সাহেদুজ্জামান বলেন, বিগত সরকারের সময় আমরা চাকরিচ্যুত হয়েছি। আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। কালো ও বৈষম্যমূলক ব্রিটিশ সামরিক আইন বাতিল করে তা সংস্কার করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারের সব দরজায় আমরা গিয়েছি। আমাদের সঙ্গে মিথ্যাচার করা হয়েছে। এখন আমাদের জীবন দিয়ে দেওয়া বাকি আছে। প্রয়োজনে আমরা তাই করব।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সেনা সদস্য মো. হানজালা, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্পোরাল শাহেদ আলম, নৌবাহিনীর সাবেক পিও আব্দুল হাকিম, বিমান বাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট আলী রেজা এবং সাবেক সেনা কর্পোরাল আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।
তিন দফা দাবিগুলো হলো-
১. চাকরিচ্যুত সব সদস্যকে যত দ্রুত সম্ভব চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. শুধুমাত্র যাদের চাকরিতে পুনর্বহাল সম্ভব নয় তাদের পূর্ণ আর্থিক সুযোগসুবিধাসহ পেনশনের আওতায় আনতে হবে।
৩. ব্রিটিশ সামরিক আইন কাঠামো সংস্কার করে সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন করতে হবে।